Header Ads

আল্লাহ কে ? পর্ব -2



আল্রাহ কে ? পর্ব -2
শিক্ষা
উল্লিখিত আয়াত সমূহে যদি আমরা চিন্তা ভাবনা করি, তাহলে অনেকগুলো শিক্ষনীয় বিষয় আমাদের সামনে সুস্পষ্ট হয়ে যাবে। এখানে আমরা কয়েকটি শিক্ষার কথা উল্লেখ করলাম।
শিক্ষা-১
আল্লাহ তা‘আলা সর্বদা আমাদেরকে দেখছেন। অতএব তার সামনে পাপ কাজ করা যাবেনা।
শিক্ষা-২
অন্তরে প্রশান্তি লাভের জন্য আল্লাহর উপর বিশ্বাসী হতে হবে, মুসলমান হতে হবে। তাহলেই অন্তরে প্রশান্তি লাভ করা সম্ভব। বিত্তশালী হলে আন্তরে শান্তি লাভ হয় না। বড় শিক্ষিত হলে অন্তরে শান্তি আসে না। আসুন অন্তরে প্রশান্তির জন্য আল্লাহর কাছে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে সপে দিই।
শিক্ষা-৩
দুই সমুদ্র একত্রে চলে, কিন্তু স্বাদ ভিন্ন, রং ভিন্ন এবং এর মধ্যে জাহাজ চলে, সে তার ক্ষমতায় চলতে পারে না, বরং আল্লাহ পারিচালনা করেন, মানুষের অনুকূলে করে দেন। এর জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি করে সফর করা এবং আল্লাহর শক্তি ও নিদর্শনসমুহ দেখা।
শিক্ষা-৪
আমরা অনেকে মনে করি মানুষ প্রাকৃতিক ভাবেই জন্ম নেয়, বড় হয়ে আবার মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু আল্লাহর কালাম পড়ে জানতে পারলাম আমাদের ধারণা ভুল, বরং আল্লাহ তা‘আলাই মায়ের গর্ভে শিশুকে প্রতিপালন করেন। নবজাতক শিশু হিসাবে দুনিয়াতে পাঠান, আবার যৌবন দান করেন। অতপর দান করেন বার্ধক্য, এরপর আবার দুনিয়া থেকে নিয়ে যান। এসব কিছু আল্লাহই করেন।
এখন আমাদের প্রয়োজন সেই আল্লাহর উপাসনা করে পরকালের প্রস্তুতি নেয়া। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক জিনিস বুঝার ও আল্লাহকে চেনার তৌফিক দান করুন আমিন।
শিক্ষা-৫
আমরা অনেকেই মনে করতাম যে গাছপালা শষ্য উদ্ভিদ এমনিই তৈরী হয়, কিন্তু কুরআনের আয়াতের দ্বারা আমাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। আয়াতগুলো থেকে জানতে পারলাম ও শিখতে পেলাম, উদ্ভিদ এমনিতেই হয় না, বরং আল্লাহ তা‘আলা মানুষের জন্য পশু পাখির জন্য নিজে তৈরী করেছেন। আল্লাহ কত বড় দয়াবান। এর পরও আমরা আল্লাহকে মানি না।
শিক্ষা-৬
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে দুনিয়াতে এমনিই পাঠাননি। খাবো দাবো আর ফুর্তি করবো, এই জন্য দুনিয়াতে পাঠাননি। বরং আমাদেরকে পাঠিয়ে তিনি পরিক্ষা করেন যে, কে কতটুকু সুন্দর আমল করে। কে কতটুকু আল্লাহকে মানে। আসুন আমরা পরিপূর্ণ ভাবে আল্লাহকে মেনে মুসলমান হয়ে ভালোভাবে আমল করে পরীক্ষায় পাস করার চেষ্টা করি।
শিক্ষা ৭
এখান থেকে আর একটি জিনিস শিখতে পেলাম যে রিজিক আকাশে। এখানেও আমাদের অনেকের একটি ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। আমরা মনে করতাম, রিজিক হলো নিজের কাছে, যে যত চেষ্টা করবে, সে তত রিজিক পাবে, তত বিত্তশালী হবে।
আমরা অনেকে মনে করি অধিক পরিশ্রম করলে অধিক রিজিক পাওয়া যাবে, যদি এই ধারণা সঠিকই হতো তাহলে দিনমজুর যারা কাজ করে তারা সবচেয়ে বিত্তশালী হতো। কিন্তু এমনটিতো হয় না।
অনেকে আবার মনে করি অনেক লেখাপড়ার কারণে রিজিক বেশি আসবে। এ ধারা যদি সঠিকই হতো তাহলে শিক্ষিতরা বেকারত্বের জীবন কাটাতো না, অনেক বিত্তশালী আছে যারা অশিক্ষিত, তাদের অধীনে শিক্ষিত ব্যাক্তি কাজ করে। এসব কিছু দ্বারা প্রমাণিত হয় আমাদের ধারণা ভুল। আল্লাহ যা বলেছেন সেটাই সঠিক রিজিক আকাশে আল্লাহর কাছে যাকে ইচ্ছা রিজিক দান করেন, যাকে ইচ্ছা দান করেন না। আসুন আমরা খাঁটি মুসলমান হয়ে আল্লাহর ইবাদত করে তার থেকে রিজিক অন্বেষণ করি।
শিক্ষাÑ ৮
আমাদের অনেকের ধারণা আমরা মনে করি যা কিছু দেখি এসব এমনিতেই হয়ে গেছে। বিষয়টি এমন নয় বরং এসব আল্লাহ তা‘আলা আমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
শিক্ষাÑ৯
তারকা সৃষ্টির কারণ আমরা জানতে পেলাম, সমুদ্রের মাঝে রাতের অন্ধকারে নৌজান জাহাজ চলাচলের জন্য, তারকা দেখে দিক ঠিক করে জাহাজ চালক জাহাজ চালায়। তারকা দ্বারা আকাশকে সুসজ্জিত করেছেন আল্লাহ তা‘আলা। আসুন আল্লাহর নিদর্শনগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা করি। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।
শিক্ষাÑ১০
অমুসলিমরা মুসলমানদের রক্তের সম্পর্কের ভাই। কারণ তারা আদমের সন্তান। আর আদম হাওয়া থেকেই আমরা সকলেই এসেছি। আর আদমের সন্তান হিসেবে পিতার রক্ত সন্তানের মাঝে থাকলে সে রক্তের সম্পর্কেরই ভাই। সকল ভাইকে আগুন থেকে বাঁচাতে হবে। দাওয়াত দিতে হবে।

নিশ্চয় আল্লাহ-

নিশ্চয় আল্লাহ নির্বাচিত করেছেন আদম আ., নূহ আ., ইব্রাহিম আ., ও আলে ইমরানকে। নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের প্রতিপালক। অতএব তারই ইবাদত করতে হবে। এটাই সরল পথ।
নিশ্চয় যারা আল্লাহকে অস্বীকার করে, দুনিয়াতে যা কিছু আছে সব কিছু দিয়েও তারা শাস্তি থেকে মুক্তি পাবেনা।
নিশ্চয় আল্লাহ ছোট ও বড় দানা ফাটিয়ে গাছ তৈরি করেন। সেই গাছে আমাদের খাবারের জন্য ফল দান করেন।
নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক হলেন আল্লাহ, যিনি আসমান যমিন সৃষ্টি করেছেন।
নিশ্চয় আল্লাহ মানুষকে জীবন দেন মৃত্যু দেন।
নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের উপর জুলুম করেন না। বরং মানুষ নিজেদের উপর জুলুম করে।
নিশ্চয় আসমান যমিনে যা আছে সব আল্লাহ তা‘আলার।
নিশ্চয় আমাদের প্রতিপালক সর্বদ্রষ্টা সর্বজ্ঞ।
নিশ্চয় আমি আল্লাহ আমি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। অতএব তোমরা আমার ইবাদত কর।
নিশ্চয় তোমাদের উপাস্য আল্লাহকে এক জেনে রাখ, তোমরা যে বিষয়ে জান না তিনি সে বিষয়ে জ্ঞান রাখেন।
নিশ্চয় আল্লাহ আসমান জমিনের অদৃশ্য বিষয়ে জ্ঞানী।
নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদেরকে জান্নাতে দিবেন।
নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক।
إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنزَلَ اللّهُ مِنَ السَّمَاء مِن مَّاء فَأَحْيَا بِهِ الأرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَآبَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخِّرِ بَيْنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ لآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
নিশ্চয় আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকা সমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা’ আলা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তা দ্বারা মৃত জমিনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও জমিনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে। -বাকারা:১৬৪
إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَى آَدَمَ وَنُوحًا وَآَلَ إِبْرَاهِيمَ وَآَلَ عِمْرَانَ عَلَى الْعَالَمِينَ
নিঃসন্দেহে আল্লাহ আদম (আ.), নূহ (আ.) ও ইব্রাহীম (আ.) এর বংশধর এবং এমরানের খান্দানকে নির্বাচিত করেছেন। -আলে ইমরান: ৩৩
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ أَنَّ لَهُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لِيَفْتَدُوا بِهِ مِنْ عَذَابِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
যারা কাফের, যদি তাদের কাছে পৃথিবীর সমুদয় সম্পদ এবং তৎসহ আরও তদনুরূপ সম্পদ থাকে আর এগুলো বিনিময়ে দিয়ে কিয়ামতের শাস্তি থেকে পরিত্রাণ পেতে চায়, তবুও তাদের কাছ থেকে তা কবুল করা হবে না। তাদের জন্যে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। -মায়েদা: ৩৬
إِنَّ اللَّهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَالنَّوَى يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَمُخْرِجُ الْمَيِّتِ مِنَ الْحَيِّ ذَلِكُمُ اللَّهُ فَأَنَّى تُؤْفَكُونَ
فالِقُ الْإِصْبَاحِ وَجَعَلَ اللَّيْلَ سَكَنًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ حُسْبَانًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
নিশ্চয় আল্লাহই বীজ ও আঁটি থেকে অঙ্কুর সৃষ্টিকারী; তিনি জীবিতকে মৃত থেকে বের করেন ও মৃতকে জীবিত থেকে বের করেন। তিনি আল্লাহ অতঃপর তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ?
তিনি প্রভাত রশ্মির উন্মেষক। তিনি রাত্রিকে আরামদায়ক করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে হিসেবের জন্য রেখেছেন। এটি পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানীর নির্ধারণ। -আনয়াম: ৯৫-৯৬
إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক। -আরাফ: ৫৪
إِنَّ وَلِيِّيَ اللَّهُ الَّذِي نَزَّلَ الْكِتَابَ وَهُوَ يَتَوَلَّى الصَّالِحِينَ
আমার সহায় তো হলেন আল্লাহ, যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। বস্তুত; তিনিই সাহায্য করেন সৎকর্মশীল বান্দাদের। -আরাফ: ১৯৬
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَالْقُرْآَنِ وَمَنْ أَوْفَى بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُمْ بِهِ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হলো মহান সাফল্য। -তাওবা: ১১১
إِنَّ اللَّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ
নিশ্চয় আল্লাহরই জন্য আসমানসমূহ ও জমিনের সাম্রাজ্য। তিনিই জিন্দা করেন ওমৃত্যু ঘটান, আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের জন্য কোন সহায়ও নেই, কোনসাহায্যকারীও নেই। -তাওবা: ১১৬
إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مَا مِنْ شَفِيعٍ إِلَّا مِنْ بَعْدِ إِذْنِهِ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ
নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরি করেছেন আসমান ও জমিনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি কার্য পরিচালনা করেন।কেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না -ইউনুস: ৩
إِنَّ اللَّهَ لَا يَظْلِمُ النَّاسَ شَيْئًا وَلَكِنَّ النَّاسَ أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
আল্লাহ জুলুম করেন না মানুষের ওপর, বরং মানুষ নিজেই নিজের উপর জুলুম করে। -ইউনুস: ৪৪
إِنَّ رَبَّكَ هُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ
নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ¯্রষ্টা, সর্বজ্ঞ। -হিজ্র: ৮৬
وَإِنَّ اللَّهَ رَبِّي وَرَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ هَذَا صِرَاطٌ مُسْتَقِيمٌ
তিনি আরও বললেন: নিশ্চয় আল্লাহ আমার পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তার এবাদত কর। এটা সরল পথ। -মারইয়াম: ৩৬
إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي
আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। সূরা ত্বহা: ১৪
إِنَّمَا إِلَهُكُمُ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَسِعَ كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا
তোমাদের ইলাহ তো কেবল আল্লাহই, যিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। সব বিষয় তাঁর জ্ঞানের পরিধিভুক্ত। -ত্বহা: ৯৮
إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آَمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণী সমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। হজ: ১৪
إِنَّ اللَّهَ يُدَافِعُ عَنِ الَّذِينَ آَمَنُوا إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ خَوَّانٍ كَفُورٍ
আল্লাহ মুমিনদের থেকে শত্রুদেরকে হটিয়ে দেবেন। আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না। -হজ: ৩৮
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর। সূরা আহযাব: ৫৬
إِنَّ اللَّهَ لَعَنَ الْكَافِرِينَ وَأَعَدَّ لَهُمْ سَعِيرًا
নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে লা’নত করেছেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত রেখেছেন। -আহযাব: ৬৪
إِنَّ اللَّهَ عَالِمُ غَيْبِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
আল্লাহ আসমান ও জমিনের অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত। তিনি অন্তরের বিষয় সম্পর্কেও সবিশেষ অবহিত। -ফাতির:৩৮
إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ أَنْ تَزُولَا وَلَئِنْ زَالَتَا إِنْ أَمْسَكَهُمَا مِنْ أَحَدٍ مِنْ بَعْدِهِ إِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُورًا
নিশ্চয় আল্লাহ আসমান ও জমিনকে স্থির রাখেন, যাতে টলে না যায়। যদি এগুলো টলে যায় তবে তিনি ব্যতীত কে এগুলোকে স্থির রাখবে? তিনি সহনশীল, ক্ষমাশীল। -ফাতির: ৪১
ুإِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ الَّذِينَ آَمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يَتَمَتَّعُونَ وَيَأْكُلُونَ كَمَا تَأْكُلُ الْأَنْعَامُ وَالنَّارُ مَثْوًى لَهُمْ
যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মতো আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম। সূরা মুহাম্মাদ: ১২
إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ غَيْبَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
আল্লাহ নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের অদৃশ্য বিষয় জানেন, তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন। -হুজরাত: ১৮
إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ
আল্লাহ তা’আলাই তো জীবিকাদাতা শক্তির আধার, পরাক্রান্ত ।-জারিয়াত : ৫৮
শিক্ষাÑ১
আমরা ভাবি আমরা এমনিতেই লালিত পালিত হই বা আমরাই ছেলে মেয়েদের লালন পালন করি। বিষয়টি এমন নয় বরং আল্লাহ তা‘আলা আমাদের প্রতিপালক। মায়ের গর্ভে তিনিই লালন পালন করেন। মায়ের কোলে তিনিই লালন পালন করেন। আসুন আমরা সেই প্রতিপালকের উপাসনা করি।
শিক্ষাÑ২
আমরা মনে করি ক্ষেতে শষ্য দানা ফেলে দিলেই সেই দানা থেকে প্রাকৃতিকভাবেই শষ্য তৈরি হয়। এই ধারণাটিও ভুল প্রমাণিত হলো। আল্লাহ নিজেই বলেছেন তিনি নিজে ছোট দানা ও বড় দানা ফাটান অতপর সেই মৃত দানা থেকে জীবিত গাছ তৈরি করেন। সেই গাছের মধ্যে ফল দান করেন। আল্লাহই মুরগি থেকে ডিম বের করেন, আবার ডিম থেকে জীবিত মুরগি বের করেন। সেই শক্তিবান আল্লাহকেই আমাদের উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
শিক্ষাÑ৩
আল্লাহর কাছে দুনিয়ার কোনো মূল্য নেই কারণ আল্লাহকে অস্বীকার কারীরা যদি পুরো দুনিয়ার পরিবর্তে মুক্তি পেতে চায় তাহলে তা পারবে না।
শিক্ষাÑ৪
আল্লাহ সর্বজ্ঞ, মানুষ যে সব বিষয়ে অজ্ঞ, আল্লাহ সেসব বিষয়ে জানেন।
শিক্ষাÑ৫
আমাদের উপাস্য একজন তিনি হলেন আল্লাহ তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই অতএব আমাদেরকে শুধু আল্লাহরই ইবাদত করতে হবে।
শিক্ষাÑ৬
আল্লাহ মুমিনদেরকে জান্নাত দেবেন। অর্থাৎ জান্নাত পেতে হলে মুমিন হতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে পাক্কা মুমিন মুসলমান হয়ে জান্নাতে যাওয়ার তাওফিক দান করুন।
শিক্ষাÑ৭
আল্লাহ মুমিনদে অবিভাবক। আল্লাহ যদি কারো অবিভাবক হয়ে যান তাহলে তার আর কোনো চিন্তাই নেই। আল্লাহ আমাদের অবিভাবক হয়ে যান। আমিন।
আল্লাহর জন্য .....
পূর্ব পশ্চিম আল্লাহর জন্য। যত দিক আছে সব আল্লাহর। দিকের স্রষ্টা হলেন আল্লাহ আসমান জমিনে যা কিছু আছে সব আল্লাহর। আসমানে গ্রহ নক্ষত্র, চাঁদ সূর্য পশুপাখি গাছপালা, মানুষ ইত্যাদি যা কিছু আমরা দেখি বা না দেখি সব কিছুর মালিক আল্লাহ। মানুষের মাঝে যা কিছু আছে সব আল্লাহর। যা আমরা প্রকাশ করি বা গোপন করি সব আল্লাহর।
আল্লাহর দিকে আমাদের ফিরে যেতে হবে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন, যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সব বিষয়ে সক্ষম।
সব জিনিস আল্লাহর বেষ্টনিতে। তার বেষ্টনির বাহিরে কেউ থাকতে পারে না। আসমান জমিনের রাজত্ব আল্লাহর। এর মাঝে যা কিছু আছে সব কিছুর উপর আল্লাহর রাজত্ব।
আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে।
আসমান জমিনে যা কিছু আছে সব আল্লাহর সেজদা করে। পশু পাখি সেজদা করে। আল্লাহ ধনী।
এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানার জন্য নি¤েœর আয়াতগুলো ভালো করে পড়–ন এবং বোঝার চেষ্টা করুন।---
وَلِلَّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
পূর্ব ও পশ্চিম আল্লারই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ। -বাকারা:১১৫
لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَإِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ فَيَغْفِرُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
যা কিছু আকাশসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু জমিনে আছে, সব আল্লাহরই। যদি তোমরা মনের কথা প্রকাশ কর কিংবা গোপন কর, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাবনেবেন। অতঃপর যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান
- সূরা বাকারা: ২৮৪
وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الْأُمُورُ
আর যা কিছু আসমান ও জমিনে রয়েছে সে সবই আল্লাহর এবং আল্লাহর প্রতিই সব কিছু প্রত্যাবর্তনশীল। -আলে ইমরান: ১০৯
وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ يَغْفِرُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
আর যা কিছু আসমান ও জমিনে রয়েছে, সেসবই আল্লাহর। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা আযাব দান করবেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী, করুণাময়। আলে ইমরান: ১২৯
وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
আর আল্লাহর জন্যই হলো আসমান জমিনের বাদশাহী। আল্লাহই সর্ব বিষয়ে ক্ষমতার অধিকারী। -আলে ইমরান: ১৮৯
وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ مُحِيطًا
যা কিছু নভোমণ্ডেলে আছে এবং যা কিছু ভূমণ্ডলে আছে, সব আল্লাহরই। সব বস্তু আল্লাহর মুষ্ঠি বলয়ে। -নিসা: ১২৬
وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَلَقَدْ وَصَّيْنَا الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَإِيَّاكُمْ أَنِ اتَّقُوا اللَّهَ وَإِنْ تَكْفُرُوا فَإِنَّ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَكَانَ اللَّهُ غَنِيًّا حَمِيدًا.
وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَكَفَى بِاللَّهِ وَكِيلًا.
আর যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে ও জমিনে সবই আল্লাহর। বস্তুতঃ আমি নির্দেশ দিয়েছি তোমাদের পূর্ববর্তী গ্রন্থের অধিকারীদেরকে এবং তোমাদেরকে যেন তোমরা সবাই ভয় করতে থাক আল্লাহকে। যদি তোমরা তা না মান, তবে জেনো, সে সবকিছুই আল্লাহ তা’আলার যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও জমিনে। আর আল্লাহহচ্ছেন অভাবহীন, প্রসংশিত।
আর আল্লাহরই জন্যে সে সবকিছু যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও জমিনে। আল্লাহই যথেষ্ট কর্মবিধায়ক। -নিসা: ১৩১-১৩২
لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا فِيهِنَّ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ .
নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল এবং এতদুভয়ে অবস্থিত সবকিছুর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান। -মায়েদা: ১২০
وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا وَذَرُوا الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي أَسْمَائِهِ سَيُجْزَوْنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ .
আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মেম ফলশীঘ্রই পাবে। -আরাফ: ১৮০
وَلِلَّهِ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَإِلَيْهِ يُرْجَعُ الْأَمْرُ كُلُّهُ فَاعْبُدْهُ وَتَوَكَّلْ عَلَيْهِ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
আর আল্লাহর কাছেই আছে আসমান ও জমিনের গোপন তথ্য; আর সকল কাজের প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকে; অতএব, তাঁরই বন্দেগী কর এবং তাঁর উপর ভরসা রাখ, আর তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে তোমার পালনকর্তা কিন্তু বে-খবর নন। -হূদ: ১২৩
وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَظِلَالُهُمْ بِالْغُدُوِّ وَالْآَصَالِ .
আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে আছে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের প্রতিচ্ছায়া ও সকাল-সন্ধ্যায়। -রাদ: ১৫
وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مِنْ دَابَّةٍ وَالْمَلَائِكَةُ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ.
আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমণ্ডলে আছে এবং যা কিছু ভুমণ্ডলে আছে এবং ফেরেশতাগণ; তারা অহংকার করে না। -নাহাল: ৪৯
وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ .
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। -নূর: ৪২
لَهُ مَقَالِيدُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآَيَاتِ اللَّهِ أُولَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ .
আসমান ও জমিনের চাবি তাঁরই নিকট। যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। - যুমার: ৬৩
لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ يَهَبُ لِمَنْ يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَنْ يَشَاءُ الذُّكُورَ .
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। -শুরা: ৪৯
وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ يَوْمَئِذٍ يَخْسَرُ الْمُبْطِلُونَ .
নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। যেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন মিথ্যাপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। -জাছিয়াহ: ২৭
فَلِلَّهِ الْحَمْدُ رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَرَبِّ الْأَرْضِ رَبِّ الْعَالَمِينَ .
অতএব, বিশ্বজগতের পালনকর্তা, ভূ-মণ্ডলের পালনকর্তা ও নভোমণ্ডলের পালনকর্তা আল্লাহর-ই প্রশংসা। জাছিয়াহ: ৩৬
وَلَهُ الْكِبْرِيَاءُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيم.
নভোমণ্ডলে ও ভূ-মণ্ডলে তাঁরই গৌরব। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। - জাছিয়াহ: ৩৭
وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا .
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ফাতাহ: ৭
وَلِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَغْفِرُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَشَاءُ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا .
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।
-ফাতহ : ১৪
وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ لِيَجْزِيَ الَّذِينَ أَسَاءُوا بِمَا عَمِلُوا وَيَجْزِيَ الَّذِينَ أَحْسَنُوا بِالْحُسْنَى.
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর, যাতে তিনি মন্দ কর্মীদেরকে তাদের কর্মের প্রতিফল দেন এবং সৎকর্মীদেরকে দেন ভাল ফল। -নাজম: ৩১
শিক্ষাÑ১
আয়াতগুলো পড়ে আমরা জানতে পারলাম যে দিকসমূহের মালিক আল্লাহ। আল্লাহ যেহেতু সব কিছু সৃষ্টি করেছেন তাই তারই ইবাদত করতে হবে।
শিক্ষাÑ২
আসমান জমিনে যা কিছু আছে সব আল্লাহর সামনে সেজদা করে। দেখুন সাপ সেজদারত। গরু ছাগল রুকু অবস্থায়। মানুষ কিয়াম অবস্থায়, গাছপালার পাতাসমূহ মাথাকে নিচের দিকে, ডালগুলো সেজদারত অবস্থায়। অতএব আমাদের উচিত আমরা সর্বদা আল্লাহর সামনে সেজদা করব।
শিক্ষাÑ৩
আমরা উদাসীন অবস্থায় ঘোরাফেরা করছি কিন্তু আমাদের জানা ছিলো যে, আমাদেরকে আবার আমাদের প্রভুর দিকে ফিরে যেতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো তাঁর কাছে যে ফিরে যাবো! তার জন্য আমাদের কী প্রস্তুতি আছে? আসুন আমরা মুসলমান হয়ে আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিই।
শিক্ষাÑ৪
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন আর যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। এখন আমাদের চেষ্টা করতে হবে আল্লাহ যেন আমাদেরকে ক্ষমা করে দেন। আর ক্ষমা করার ইচ্ছা তখনই হবে যখন আমরা আল্লাহকে খুশি করতে পারবো। আল্লাহকে খুশি করার পদ্ধতি হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য করা।
আসুন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য করে আল্লাহকে খুশি করি এবং নিজেকে ক্ষমার যোগ্য বানাই আল্লাহ আমাদের উপর রাজি হয়ে ক্ষমা করে দেন।
তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে শাস্তি দেন। আল্লাহ তাকেই শাস্তি দেন, যার উপর তিনি নারাজ হন। আল্লাহ ওই লোকের উপর নারাজ হন যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে না আল্লাহ ছাড়া অন্য কতককে উপাস্য হিসাবে গ্রহণ করে, শিরক করে।
আসুন আমরা শিরক থেকে বাঁচি, আল্লাহকে বিশ্বাস করি, মুসলমান হয়ে আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তি পাই। আল্লাহ আমাদের সঠিক পথের সন্ধান দিন। আমিন।
শিক্ষাÑ৫
সবকিছুর উপর আল্লাহর রাজত্ব, চাঁদের ওপর রাজত্ব আল্লাহর। সূর্যের ওপর রাজত্ব আল্লাহ তা‘আলার। দুনিয়ার কোনো রাজত্ব সেখানে রাজত্ব করতে পারে না। বাতাসের ওপর রাজত্ব আল্লাহর, আসমান জমিনে যা কিছু আছে সবকিছুর উপরে রাজত্ব চলে আল্লাহর।
শিক্ষাÑ৬
আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে। আল্লাহর ৯৯টি গুনগত নাম রয়েছে। এই নাম পড়ে যারা আল্লাহর কাছে দু‘আ করবে আল্লাহ তাদের দু‘আ কবুল করবেন।




আল্লাহর ৯৯ নাম

এই নামসমূহের ব্যাপারে ক্বুরআনের বর্ণনায় আল্লাহ তাআলার উদ্ধৃতি এসেছে
আল্লাহ বলে আহ্বান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহ্বান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই। --- সূরা বনী-ইসরাঈল আয়াত ১১০।
অনেকগুলো হাদিস দ্বারাই প্রমাণিত যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহ'র অনেকগুলো নাম-এর উল্লেখ করেছেন।
উদাহরণ স্বরূপ, একটি বিশুদ্ধ হাদিসে হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) জনাব মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উক্তি বর্ণনা করেন যে,

حَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، جَمِيعًا عَنْ سُفْيَانَ، - وَاللَّفْظُ لِعَمْرٍو - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ لِلَّهِ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ اسْمًا مَنْ حَفِظَهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَإِنَّ اللَّهَ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ ‏"‏ ‏.‏ وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ أَبِي عُمَرَ ‏"‏ مَنْ أَحْصَاهَا ‏"‏.

অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলার ৯৯টি নাম আছে; সেগুলোকে মুখস্থকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বিজোড় (অর্থাৎ, তিনি একক, এবং এক একটি বেজোড় সংখ্যা), তিনি বিজোড় সংখ্যাকে ভালোবাসেন। আর ইবনে উমরের বর্ণনায় এসেছে যে, (শব্দগুলো হলো) যে ব্যক্তি সেগুলোকে পড়বে"।[৪]

ক্বুরআনের বর্ণনায় আল্লাহ'র গুণবাচক নামসমূহকে ‘সুন্দরতম নামসমূহ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। (নিম্ন-বর্ণিত দেখুন সূরা আল আরাফ ৭:১৮০, বনী-ইসরাঈল ১৭:১১০, ত্বোয়া-হা ২০:৮, আল হাশ্র ৫৯:২৪)।
ক্বুরআনে প্রাপ্ত আল্লাহ'র ৯৯টি নাম

আরবীতে বর্ণান্তর অণুবাদ (আলোচ্য বিষয়বস্তুর উপর অর্থ নির্ভরশীল) কুরআন-কারীমে এই নামের ব্যবহার
১ الله আল্লাহ আল্লাহ অসংখ্যবার ব্যবহৃত।
২ الرحمن আর রাহমান পরম দয়ালু ।
৩ الرحيم আর-রহী'ম, অতিশয়-মেহেরবান ।
৪ الملك আল-মালিক, সর্বকর্তৃত্বময়।
৫ القدوس আল-কুদ্দুস, নিষ্কলুষ, অতি পবিত্র।
৬ السلام আস-সালাম, নিরাপত্তা-দানকারী, শান্তি দানকারী।
৭ المؤمن আল-মু'মিন, নিরাপত্তা ও ঈমান দানকারী।
৮ المهيمن আল-মুহাইমিন, পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণকারী।
৯ العزيز আল-আ'জীজ, পরাক্রমশালী, অপরাজেয়।
১০ الجبار আল-জাব্বার, দুর্নিবার।
১১ المتكبر আল-মুতাকাব্বিইর, নিরঙ্কুশ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী।
১২ الخالق আল-খালিক,¡ সৃষ্টিকর্তা।
১৩ البارئ আল-বারী, সঠিকভাবে সৃষ্টিকারী ।
১৪ المصور আল-মুছউইর, আকৃতি-দানকারী
১৫ الغفار আল-গফ্ফার, পরম ক্ষমাশীল
১৬ القهار আল-ক্বাহার, কঠোর।
১৭ الوهاب আল-ওয়াহ্হাব, সবকিছু দানকারী।
১৮ الرزاق আর-রজ্জাক্ব, রিযকদাতা।
১৯ الفتاح আল ফাত্তাহ, বিজয়দানকারী।
২০ العليم আল-আ'লীম, সর্বজ্ঞ।
২১ القابض আল-ক্ববিদ্ব', সংকীর্ণকারী।
২২ الباسط আল-বাসিত প্রশস্তকারী।
২৩ الخافض আল-খফিদ্বু. অবনতকারী।
২৪ الرافع আর-রফীই', উন্নতকারী।
২৫ المعز আল-মুই'জ,¡, সম্মান-দানকারী।
২৬ المذل আল-মুদ্বি'ল্লু , বেইজ্জতকারী।
২৭ السميع আস্-সামিই', সর্বশ্রোতা।
২৮ البصير আল-বাছীর, সর্ববিষয়-দর্শনকারী।
২৯ الحكم আল-হা'কাম, অটল বিচারক।
৩০ العدل আল-আ'দল, পরিপূর্ণ-ন্যায়বিচারক।
৩১ اللطيف আল-লাতীফ, সকল-গোপন-বিষয়ে-অবগত।
৩২ الخبير আল-খ'বীর, সকল ব্যাপারে জ্ঞাত।
৩৩ الحليم আল-হা'লীম, অত্যন্ত ধৈর্যশীল।
৩৪ العظيم আল-আ'জীম, সর্বোচ্চ-মর্যাদাশীল।
৩৫ الغفور আল-গফুর, পরম ক্ষমাশীল।
৩৬ الشكور আশ্-শাকুর, গুণগ্রাহী।
৩৭ العلي আল-আ'লিইউ, উচ্চ-মর্যাদাশীল।
৩৮ الكبير আল-কাবিইর, সুমহান।
৩৯ الحفيظ আল-হা'ফীজ, সংরক্ষণকারী।
৪০ المقيت আল-মুক্বীত, সকলের জীবনোপকরণ-দানকারী।
৪১ الحسيب আল-হাসীব, হিসাব-গ্রহণকারী।
৪২ الجليل আল-জালীল, পরম মর্যাদার অধিকারী।
৪৩ الكريم আল-কারীম, সুমহান দাতা।
৪৪ الرقيب আর-রক্বীব, তত্ত্বাবধায়ক।
৪৫ المجيب আল-মুজীব, জবাব-দানকারী, কবুলকারী।
৪৬ الواسع আল-ওয়াসি', সর্ব-ব্যাপী, সর্বত্র-বিরাজমান।
৪৭ الحكيم আল-হাকীম, পরম-প্রজ্ঞাময়।
৪৮ الودود আল-ওয়াদুদ, (বান্দাদের প্রতি) সদয়।
৪৯ المجيد আল-মাজীদ, সকল-মর্যাদার-অধিকারী।
৫০ الباعث আল-বাই'ছ', পুনরুজ্জীবিতকারী।
৫১ الشهيد আশ্-শাহীদ, সর্বজ্ঞ-স্বাক্ষী।
৫২ الحق আল-হা'ক্ব, পরম সত্য।
৫৩ الوكيل আল-ওয়াকিল, পরম নির্ভরযোগ্য কর্ম-সম্পাদনকারী।
৫৪ القوي আল-ক্বউইউ, পরম-শক্তির-অধিকারী।
৫৫ المتين আল-মাতীন, সুদৃঢ়।
৫৬ الولي আল-ওয়ালিইউ, অভিভাবক ও সাহায্যকারী।
৫৭ الحميد আল-হা'মীদ, সকল প্রশংসার অধিকারী ।
৫৮ المحصي আল-মুহছী, সকল সৃষ্টির ব্যপারে অবগত।
৫৯ المبدئ আল-মুব্দি', প্রথমবার-সৃষ্টিকর্তা।
৬০ المعيد আল-মুঈ'দ, পুনরায়-সৃষ্টিকর্তা।
৬১ المحيي আল-মুহ'য়ী, জীবন-দানকারী।
৬২ المميت আল-মুমীত, মৃত্যু-দানকারী।
৬৩ الحي আল-হাইয়্যু, চিরঞ্জীব।
৬৪ القيوم আল-ক্বাইয়্যুম, সমস্ত কিছুর ধারক ও সংরক্ষণকারী।
৬৫ الواجد আল-ওয়াজিদ, অফুরন্ত ভাণ্ডারের অধিকারী।
৬৬ الماجد আল-মাজিদ, শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী।
৬৭ الواحد আল-ওয়াহি'দ, এক ও অদ্বিতীয়।
৬৮ الصمد আছ্-ছমাদ, অমুখাপেক্ষী।
৬৯ القادر আল-ক্বদির, সর্বশক্তিমান।
৭০ المقتدر আল-মুক্ব্তাদির, নিরঙ্কুশ-সিদ্ধান্তের-অধিকারী।
৭১ المقدم আল-মুক্বদ্দিম, অগ্রসারক।
৭২ المؤخر আল-মুয়াক্খির, অবকাশ দানকারী।
৭৩ الأول আল-আউয়াল, অনাদি।
৭৪ الأخر আল-আখির, অনন্ত, সর্বশেষ।
৭৫ الظاهر আজ-জ'হির, সম্পূর্ণ রূপে-প্রকাশিত।
৭৬ الباطن আল-বাত্বিন, দৃষ্টি হতে অদৃশ্য।
৭৭ الوالي আল-ওয়ালি, সমস্ত-কিছুর-অভিভাবক।
৭৮ المتعالي আল-মুতাআ'লি, সৃষ্টির গুনাবলীর উর্দ্ধে।
৭৯ البر আল-বার, পরম-উপকারী, অণুগ্রহশীল।
৮০ التواب আত্-তাওয়াব, তাওবার তাওফিক দানকারী এবং কবুলকারী ।
৮১ المنتقم আল-মুনতাক্বিম, প্রতিশোধ-গ্রহণকারী।
৮২ العفو আল-আ'ফঊ, পরম-উদার।
৮৩ الرؤوف আর-রউফ, পরম-স্নেহশীল।
৮৪ مالك الملك মালিকুল-মুলক, সমগ্র জগতের বাদশাহ্।
৮৫ ذو الجلال والإكرام যুল-জালালি-ওয়াল-ইকরাম, মহিমান্বিত ও দয়াবান সত্তা।
৮৬ المقسط আল-মুক্ব্সিত, হকদারের হক-আদায়কারী।
৮৭ الجامع আল-জামিই', একত্রকারী, সমবেতকারী।
৮৮ الغني আল-গণিই', অমুখাপেক্ষী ধনী।
৮৯ المغني আল-মুগনিই', পরম-অভাবমোচনকারী।
৯০ المانع আল-মানিই', অকল্যাণরোধক।
৯১ الضار আয্-যর, ক্ষতিসাধনকারী।
৯২ النافع আন্-নাফিই', কল্যাণকারী।
৯৩ النور আন্-নূর, পরম-আলো।
৯৪ الهادي আল-হাদী, পথ-প্রদর্শক।
৯৫ البديع আল-বাদীই', অতুলনীয়।
৯৬ الباقي আল-বাক্বী, চিরস্থায়ী, অবিনশ্বর।
৯৭ الوارث আল-ওয়ারিস', উত্তরাধিকারী।
৯৮ الرشيد আর-রাশীদ, সঠিক পথ-প্রদর্শক।
৯৯ الصبور আস-সবুর, অত্যধিক ধৈর্যধারণকারী।

শিক্ষাÑ৭
ফেরেস্তা ও পশু-পাখি আল্লাহর সেজদা করে।
হে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলুন সকল রাজত্বের মালিক হলেন আল্লাহ। তিনি হলেন সকল বাদশাহর বাদশাহ। তিনি যাকে ইচ্ছা বাদশাহী দান করেন, যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন, যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন।
বলুন সকল প্রসংশা মহান আল্লাহর যার কোনো সন্তানাদি নেই। এবং তার রাজত্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো শরিক বা অংশীদার নেই।
বলুন আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ভালো জানেন।
বলুন আল্লাহই তোমাদেরকে বানিয়েছেন। তোমাদেরকে কান, চোখ তিনিই দিয়েছেন।
বলুন আল্লাহই ক্ষেত উৎপাদন করেন, তার কাছেই ফিরে যেতে হবে।
বলুন আল্লাহ এক। আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন। তার সমকক্ষ কেউ নেই।

বলুন আল্লাহ.....
قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ .

বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্যদান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ।নিশ্চয় তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। -আলে ইমরান: ২৬
وَقُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي لَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُنْ لَهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ وَلِيٌّ مِنَ الذُّلِّ وَكَبِّرْهُ تَكْبِيرًا .
বলুন: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি না কোন সন্তান রাখেন, না তাঁর সার্বভৌমত্বে কোন শরীক আছে এবং যিনি দুর্দশাগ্রস্ত হন না, যে কারণে তাঁর কোন সাহয্যকারীর প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং আপনি স-সম্ভ্রমে তাঁর মাহাতœø বর্ণনা করতে থাকুন। -বনী ইসরাঈল: ১১১
قُلِ اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا لَبِثُوا لَهُ غَيْبُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ أَبْصِرْ بِهِ وَأَسْمِعْ مَا لَهُمْ مِنْ دُونِهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا.
বলুনঃ তারা কতকাল অবস্থান করেছে, তা আল্লাহই ভালো জানেন। নভোমণ্ডল ও ভূণ্ডলের অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই কাছে রয়েছে। তিনি কত চমৎকার দেখেন ও শোনেন। তিনি ব্যতীত তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। তিনি কাউকে নিজকর্তৃত্বে শরীক করেন না। -কাহাফ: ২৬
قُلْ هُوَ الَّذِي أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ .
قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ .
বলুন, তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং দিয়েছেন কর্ণ, চক্ষু ও অন্তর। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
বলুন, তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে বিস্তৃত করেছেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা সমবেত হবে। -মুলক : ২৩-২৪
শিক্ষাÑ১
রাজত্বের মালিক গণতন্ত্র বা রাজতন্ত্র নয়, বরং রাজত্বের মালিক হলেন আল্লাহ। তিনি সকল বাদশাহর বাদশাহ।
শিক্ষাÑ২
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তা‘আলার, তিনিই সকল নেয়ামত দান করেন। মানুষের প্রশংসা করা সেটাও আল্লাহর প্রশংসা।
শিক্ষাÑ৩
আল্লাহ ক্ষেত শষ্য উৎপাদন করেন। মানুষকে আবার আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে তার কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার তৌফিক কান করুন। আমিন।

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ.
الرَّحْمَنِ الرَّحِيم
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ .
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।
যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। যিনি বিচার দিনের মালিক।
ফাতিহা: ১-৩
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَى عَبْدِهِ الْكِتَابَ وَلَمْ يَجْعَلْ لَهُ عِوَجًا .
সব প্রশংসা আল্লাহর যিনি নিজের বান্দার প্রতি এ গ্রন্থ নাযিল করেছেন এবং তাতে কোন বক্রতা রাখেননি। -কাহাফ: ১
أَلَا إِنَّ لِلَّهِ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَتَّبِعُ الَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ شُرَكَاءَ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُونَ .
শুনছ, আসমানসমূহে ও জমিনে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহর। আর এরা যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে শরীকদের উপাসনার পেছনে পড়ে আছে-তা আসলে কিছুই নয়। এরা নিজেরই কল্পনার পেছনে পড়ে রয়েছে এবং এছাড়া আর কিছু নয় যে, এরা বুদ্ধি খাটাচ্ছে। -ইউনুস: ৬৬
أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللَّهَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ قَادِرٌ عَلَى أَنْ يَخْلُقَ مِثْلَهُمْ وَجَعَلَ لَهُمْ أَجَلًا لَا رَيْبَ فِيهِ فَأَبَى الظَّالِمُونَ إِلَّا كُفُورًا .
তারা কি দেখেনি যে, যে আল্লাহ আসমান ও যমিন সৃজিত করেছেন, তিনি তাদের মতমানুষও পুনরায় সৃষ্টি করতে সক্ষম? তিনি তাদের জন্যে স্থির করেছেন একটি নির্দিষ্ট কাল, এতে কোন সন্দেহ নেই; অতঃপর জালেমরা অস্বীকার ছাড়া কিছু করেনি। -বনী ইসরাঈল: ৯৯
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يُسَبِّحُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالطَّيْرُ صَافَّاتٍ كُلٌّ قَدْ عَلِمَ صَلَاتَهُ وَتَسْبِيحَهُ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِمَا يَفْعَلُونَ .
তুমি কি দেখ না যে, নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যারা আছে, তারা এবং উড়ন্ত পক্ষীকুল তাদের পাখা বিস্তার করতঃ আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। প্রত্যেকেই তার যোগ্য এবাদত এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার পদ্ধতি জানে। তারা যা করে, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।
-আন-নূর: ৪১
أَلَا إِنَّ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ قَدْ يَعْلَمُ مَا أَنْتُمْ عَلَيْهِ وَيَوْمَ يُرْجَعُونَ إِلَيْهِ فَيُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوا وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ .
জেনে রাখ, আসমানসমূহ ও জমিনে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই; তোমরা যে অবস্থায় আছ তা তিনি অব্যশই জানেন এবং যেদিন তাদেরকে তার কাছে ফিরিয়ে নেয়া হবে সেদিন তারা যা করত তিনি তাদেরকে তা জানিয়ে দেবেন। আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত। -আন-নূর: ৬৪

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى وَأَنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ .
তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন? তিনি চন্দ্র ও সূর্যকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে। তুমি কি আরও দেখ না যে, তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন । লুকমান: ২৯
ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ الْبَاطِلُ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ .
এটাই প্রমাণ যে, আল্লাহ-ই সত্য এবং আল্লাহ ব্যতীত তারা যাদের পূজা করে সব মিথ্যা। আল্লাহ সর্বোচ্চ, মহান। -লুকমান: ৩০

ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ مَوْلَى الَّذِينَ آَمَنُوا وَأَنَّ الْكَافِرِينَ لَا مَوْلَى لَهُمْ .
এটা এজন্যে যে, আল্লাহ মুমিনদের হিতৈষী বন্ধু এবং কাফেরদের কোন হিতৈষী বন্ধু নাই। -মুহাম্মাদ: ১১

سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ .
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ড লে যা কিছু আ ছে, সবাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি শক্তিধর; প্রজ্ঞাময়। হাদীদ: ১
لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ .
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। হাদীদ: ২
لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الْأُمُورُ.
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব তাঁরই। সবকিছু তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। -হাদীদ: ৫

No comments

Powered by Blogger.