দাওয়াতী সফর রাজশাহী জেলা পর্ব-১
দুদিন আগেই রাজশাহী জেলায় "অমুসলিমদের মাঝে দাওয়াতী সফর" উপলক্ষে টিকেট কাটা হয়েছে। দু দিনের অপেক্ষায় সময় যেন আর যাচ্ছে না, সেই দাওয়াতে সফরের জন্য কত প্রস্তুতি চলছে আর মাত্র একদিন। বিকাল ৫টায় ফোন দিলাম কিছুক্ষণ পরে আব্দুল বাসির ভাই চলে এসেছে। মনের মধ্যে সাহস আরো বেড়ে গেল। অবশেষ একদিন সময় ও চলে গেল। এখন সেই রাত ১১ টার ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় আছি। দশটার দিকে মান্ডা থেকে উস্তাদের কাছ থেকে দোয়া ও বিদায় নিয়ে কমলাপুর স্টেশনের দিকে রওনা হলাম। স্টেশনে এসে দেখি যে আমরা রাজশাহীতে যাব সেই ট্রেন এখনো প্লাটফর্মে আসেনি। বসে রইলাম দুজনেই আব্দুল বাসির ভাই তিনি মাও: সালমান সাহেব যিনি (দারুর রাশাদ মাদরাসার মুহতামিম) এর সাথে সফরের একটি ঘটনা বর্ণনা করতেছিলেন; কিছুক্ষণ পর প্লাটফর্মে তাকিয়ে দেখতে পেলাম আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেই পদ্মা ট্রেন দাঁড়ানো আছে। দুজনেই ট্রেনে উঠলাম।
আমাদের দুজনের সিট পড়েছে দুই পাশে একসাথে বসার সুযোগ নেই। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম যে দু জন একসাথে বসবো একসাথে কথা বলব। সুযোগ হবে অন্যথায় দু পাশে বসলে দুজনেরই ভালো লাগবে না। আর পাশের যে লোক তিনি যদি চলে আসেন তাহলে তাকে বুঝিয়ে বলব আপনি পাশের সিটে চলে যান প্লীজ আমাদের একটি সিট আছে ওখানে। আব্দুল বাসির ভাই বেশ ভালো এবং পরিশ্রমী একজন দা'য়ী যার বর্ণনা আমি এখানে দিতে চাচ্ছি না তারপরও কিছু না বললেই নয়। বেশ কয়েক বছর আগেই আমাদের এই প্রতিষ্ঠান থেকে দাওয়া শেষ করেছেন ; জীবনের এক মিশন দাওয়াতী কাজ এই মিশন হিসেবে তিনি এটাকে বেছে নিয়েছেন। পেশা হিসেবে বলা যেতে পারে; এটাই যেন তার পেশা এবং নেশা ধর্মের ফেরিওয়ালা হিসেবে কাজ করেছেন এবং সহিহ নিয়তের সাথে কুড়িগ্রাম জেলায় অবশেষ কিছুদিন জামালপুরে ও কাটিয়েছেন বছরখানেক তারপর সিদ্ধান্তক্রমে এখন সফর শুরু রাজশাহী বিভাগের দিকে। সঙ্গে আমাকেও যেতে হচ্ছে অনেক কথা হচ্ছিল দাওয়াতি বিষয়ে। রাত তখন বারোটা বাজে। ঘড়ির কাটা যেন একটা বাজে মানুষ যখন ঘুমের দিকে; আমিও ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুমাতে ঘুমাতে অবশেষে চলেই আসলাম আমাদের গন্তব্যস্থানে। ঘুম থেকে চোখ মেলে তাকালাম দেখি আমি তো এখন রাজশাহী প্লাটফর্মে আছি ট্রেন থেমেছে কিছুক্ষণ আগেই। মানুষ লাফিয়ে লাফিয়ে নামছে। অবশেষে ট্রেন থেকে দুজনই নেমে বাইরে গিয়ে আশেপাশে মসজিদ খুজতেছিলাম চোখে পড়ে না।
একজনকে জিজ্ঞেস করলাম এখানে মসজিদ কোথায়; বলল প্ল্যাটফর্মের দ্বিতীয় তলায় চলে যান সেখানে মসজিদ পাবেন। গিয়ে দেখি মসজিদের টয়লেটে অনেক ভিড় ; তাই ভাবলাম বাহিরে যদি মসজিদ পাওয়া যায় তাহলে সেখানে অবস্থান করা ভালো হবে। কিন্তু বাহিরে গিয়ে দেখি তার বিপরীত ; মসজিদের কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জিজ্ঞেস করলাম এক দোকানিকে সে বলল অনেক দূর মসজিদ আপনারা বরং প্ল্যাটফর্মের মসজিদে নামাজ পড়েন। এটাই সবচাইতে ভালো হবে, আবার নিরাশ হয়ে চলে আসলাম প্লাটফর্মে মসজিদে দীর্ঘ লম্বা লাইনে দাড়িয়ে ওজু করলাম এতক্ষণে ফজরের নামাজ শেষ। তারপরে নিজে নিজেই ফজরের নামাজ আদায় করলাম, নামাজ আদায় করে বাইরে বের হতে যাচ্ছিলাম তখন আব্দুল বাসির ভাই মোবাইল বের করলেন। বেশ কয়েকবার ফোন আসছিল কিন্তু ঘুমিয়ে থাকার কারণে হয়তো তিনি টেরই পাননি। ফোন দিচ্ছিলেন তিনি হলেন আব্দুল্লাহ তালহা ফেসবুকে উনার সাথে পরিচয় সেই সুবাদে তিনি খবর নিচ্ছিলেন। আমরা কোথায় আছি এখন তিনি জানালেন যে ভদ্রা পদ্মা আবাসিক এলাকায় যাওয়ার জন্য সেখানে তিনি এক মাদরাসার উস্তাদ হিসাবে আছেন।
No comments