আমাদের জীবনের উদ্দ্যেশ্য কি?
প্রিয় ভাইটি আমার! আপনি কি
একটু ভেবেছেন? আমাদের জীবনের উদ্দ্যেশ্য
কি? কেন আমরা এই ধরায় এসেছি? আমরাকি এসেছি? না আমাদেরকে পাঠানো হয়েছে? যদি পাঠানোই হয়ে থাকে
তাহলে কেন পাঠিয়েছেন? আমরা একটু ভেবেছি কি?
আমাদের একটি দুর্বলতা হলো আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য
ঠিক করতে পারি না। স্কুলের একজন ছাত্র ৮ম শ্রেণী পাশ করার পর জীবনের উদ্দেশ্য ঠিক করে
ফেলে। সে ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়ার হবে। এডভোকেট
হবে, না ব্যবসায়ী হবে। এর পর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে
তার মেধা, শ্রম, টাকা-পয়সা ব্যয় করতে থাকে। তার গন্তব্যে পৌঁছার জন্য সর্বোচ্চ
চেষ্টা করে যায়। অধিকাংশ ছাত্র তার গন্তব্যে পৌঁছতে সফল হয়। কিন্তু আমরা দাওরায়ে হাদিসের
শেষ প্রান্তে গিয়েও নিজের জীবনের উদ্দেশ্য ঠিক করতে পারি না। এটা আমাদের জন্য দুঃখ
জনক ব্যাপার। হ্যাঁ কিছু ভায়ের নিয়ত থাকে। যে, আমি দাওরা হাদিস পাশ করে ইফতা পড়বো। হাদিস পড়বো। বা খেদমত করবো।
বা ব্যাবসা বানিজ্য করবো। এগুলো কিন্তু জীবনের টার্গেট বা উদ্দেশ্য নয়, এগুলো হলো নিয়ত। আসুন আমরা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য ঠিক করি।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা আমাদের কি নির্দেশ দেন। এর জন্য চলুন দেখি পবিত্র কুআনুল কারীম
কী বলে? আল্লাহ তাআলা আমাদের জীবনের
উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন-
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ
تَأْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ
.
তোমরাই সর্বোত্তম জাতি। তোমাদেরকে
বের করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। তোমরা মানুষকে সৎকাজের আদেশ দাও এবং অসৎকাজ হতে নিষেধ করো। এবং আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করো।”
-আলে ইমরান:১১০
দেখুন এখানে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। আমাদের উচ্ছায় আমরা দুনিয়াতে আসিনি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদেরকে পাঠানো
হয়েছে। তাফেিসর জালালাইন শরীফে ব্যাখ্যা করা হয়েছে তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের
জন্য । অর্থাৎ মানুষকে ইসলামের
দাওয়াত দেওয়ার জন্য আর হিন্দু,খ্রিস্টান সকল অমুসলিম
তারাও মানুষ। আল্লাহ তাআলা সকল মানুষকে দাওয়াত দেওয়ার জন্য আমাদেরকে পাঠিয়েছেন। মেন নবীজীকেও পাঠিয়েছেন সকল মানুষের জন্য। তদরূপ কুরআনও সকল মানুষের জন্য।
আর আমরাও হলাম সকল মানুষের
জন্য। একটু ভাবুন, আমাদের প্রতিবেশী অমুসলিম
হিন্দু বা খ্রিস্টান বাড়ীতে যদি আগুন লেগে যায়। তাহলে আমরা কি বসে থাকব? না কক্ষনো না। আগুন নিভানোর জন্য ঝাপিয়ে পরবো। কিন্তু এই আগুন
দ্বারা যদি ত্বক জ্বলে যায়, তাহলে ওষুধ দিয়ে ত্বক
ফিরিয়ে আনা সম্ভব। বাড়ি-ঘর পুরে গেলে উত্তম
বড়ি বানানো সম্ভব। কিন্তু এই অমুসলিম ভাই বোনটি মারা যায়, তাহলে চিরস্থায়ী আগুনে জ্বলবে যার শুরু আছে শেষ নেই। তাদেরকে
আগুন থেকে বাঁচানোর জন্য কখনো ভেবেছি কি? অমুসলিমদেরকে আগুন থেকে বাঁচানোর জন্য যেই অস্থিরতা ছিল, তার ওয়ারিস হিসাবে আমাদের কি নূন্যতম অস্থিরতা আছে? নবীজী যে ভাবে তাদের জন্য দুআ করে ছিলেন আমরাকি তাদের নাম ধরে দুআ করে ছি? এক ফোটা অশ্রু তাদের হেদায়াত দেওয়ার জন্য নবীজী অস্থির ছিলেন
এবং দাওয়াত দিয়েছন, তাদেরকে দাওয়ার জন্য আমরা
কি করেছি ? একটু ভাবুন।
আল্লাহর দরবারে দুআ করি,
তিনি যেন উম্মতকে তাদের যিম্মাদারীর হক আদায় করার
তৌফিক দান করেন। আমিন।
এই আলোচনা দ্বারা আমরা বুঝতে
পারলাম আমাদের উদ্দেশ্য। আর তা হলো মানুষকে ইসলামের প্রতি দাওয়াত দেয়া। তাই একটু ভাবুন,
এই কাজটি আমরা কয়জন মুসলিম করছি? আমরা যদি দা‘য়ী না হই,
তাহলে মাদউ হতে হবে। আমরা দাওয়াতকে ভুলে গিয়েছি।
তাই আজ আমরা বাংলাদেশে মাদউতে পরিনত হচ্ছি। তার কয়েকটি শিরোনাম আপনাদের শুনাচ্ছি। আমরা
একবার গেলাম লালমনির হাট জেলার আদিত মারি থানায়, সেখানে গিয়ে দেখি মসজিদের খতিব সাহেব খ্রিস্টান। নাম তার জবান
ক্বারী। এক বার গেলাম মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানার সানমান্ডা গ্রামে সেখানে গিয়ে দেখলাম
পীর সাহেব খ্রিস্টান। জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার তেঘুরিয়াতে গিয়ে দেখলাম মুসলামানদের
গ্রামে খ্রিস্টানদের গির্জা। দিনাজপুর জেলার পার্ববতীপুর থানার মুন্সিপাড়ার মসজিদের
সামনের মুন্সিবাড়ির লোকজন খ্রিস্টান। ইত্যাদি। এমনকি খ্রিস্টানরা আমাদের বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে তাদের
ধর্ম প্রচার করে। বিভিন্ন বইয়ের মাধ্যমে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করে। উদহারণ স্বরূপ কয়েকটি
ছবি আমি আমপনাদের কাছে পেশ কাছি।
যে সব বইয়ের মাধ্যমে মুসলমানদের
খ্রিস্টান বানায়
খ্রিস্টানরা তাদের বাইবেল
দ্বারা মুসলমানদের দাওয়াত দেয় না। দাওয়াত দেয় মুসলমানদেরকে ধোঁকা দিয়ে। ইসলামী পরিভাষা
ব্যবহার করে। কুরআনের আয়াতের অপব্যাখ্যা করে। তারা যে সব বই দ্বারা মানুষকে বিভ্রান্ত
করে তার মধ্যে কয়েকটি নি¤েœ পাঠকদের খেদমতে পেশ করছি। বইগুলো দেখলে মনে হয় না যে,
এগুলো খ্রিস্টানদের বই। মানুষ এগুলো ইসলামী বই মনে
করেই মুলত খ্রিস্টান হয়।
এধরণের আরো বহু কিতাব রয়েছে
যা এখানে পেশ করা সম্ভব নয়, এর জন্য ‘বাংলাদেশে খ্রিস্টান মিশনারীদের অপতৎপরতা ও আমাদের করনীয়’ বইটি পড়া যেতে পারে।
খ্রিস্টানরা আমাদের বিশ্ব
ইজতেমায় তাদেরধর্ম প্রচার করে
খ্রিস্টারনা বিভিন্ন ভাবে
প্রকাশ্যে তাদের ধর্ম প্রচার করে, এমনকি আমাদের বিশ্ব
ইজতেমায়ও তাদের ধর্ম প্রচার করে। নি¤েœ কয়েকটি ছবি পেশ করলাম। আমরা
দা‘য়ী না হওয়ার কারণে মাদউ হচ্ছি। আমাদের আকাবির গণ
ইসলাম প্রচারের জন্য নিজ দেশ ত্যাগ করে তারা বিভিন্ন দেশে এসে জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা দাওয়াত ছেড়ে দেওয়ার কারণে আজ বিদেশ থেকে খ্রিস্টানরা
এসে মানুষকে খ্রিস্টান বানাচ্ছে এবং এদেশেই তাদের কবর রচিত হচ্ছে। এখানে দু-এক জনের
ছবি পেশ করছি।
বাংলাদেশে যেসব প্রচারক মানুষকে
খ্রিস্টান বানানোর জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে তাদের কয়েক
জনের ছবি ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিচ্ছি।
১ম ব্যক্তি ফাদার এনজো কর্বা,
পিমে। তিনি ১৯৫৬ সনে পাদ্রীর পদ পান। বাড়ি ইতালী।
১৯৫৮ সনে বাংলাদেশে আসে। এসেই চলে যায় ঠাকুরগায়ের রুহিয়া ইউনিয়নে। সেখানে অনেক মানুষকে
খ্রিস্টান বানায়। এর পর সর্ব শেষ দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানার সিংরাবনে বিশাল গির্জ
স্থাপন করে। বনের উপজাতিদেরকে খ্রিস্টানা বানায় এবং অনেক মুসলমানকেউ খ্রিস্টান বানায়,
সিংরাবনেই ২৯নভেম্বর ২০১২সালে মৃত্যুবরণন করেন।
ওখানেই তার কবর রচিত হয়। আমি নিজে সেখানে কয়েক বার সফর করেছি। দেখেছি তার কার্যক্রম।
২য় ও ৩য় ব্যাক্তিও একই ভাবে
ইতালী থেকে এসে এদেশে মানুষকে খ্রিস্টানা বানিয়ে সর্বশেষ এ দেশেই মৃত্যুবরণ করেছেন।
দেখুন ভাই আমাদের দেশে ইসলাম
প্রচার করার জন্য এসেছিলেন শাহ জালাল ইয়ামেনী রহ. বাবা আদম শহীদ রহ. খানজাহানআলী রহ.
শাহ রপোশ রহ. কেরামত আলী জৈনপুরী রহ.প্রমুখ তাঁরা এদেশের মানুষকে জাহান্নামের আগুন
তেকে বাচিয়েছেন। তাদের দাওয়াতের ফরে আমাদের মুখে দাড়ি, মাথায় টুপি। আমরা মুসলমান। তাদের উত্তর সুরী হিসাবে আমাদের কি
করা উচিত? আমাদেরও উচিৎ এই ইসলামের দাওয়াত
নিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরা।
খ্রিস্টানরা যদি তাদের জীবন
দিতে পারে, আমাদেরকে খ্রিস্টান বানানোর
জন্য। আমরা কি পারবো না? অবশ্যই পারবো। আমরা
আলমী নবীর আলমী উম্মত। তাই আমাদের টার্গেটও হবে আলম। এই দাওয়াতী কাজ আমাদের দায়িত্ব।
ফরযে কেফায়া । তাই এই মহান দয়িত্ব আদায়ের লক্ষে অর্থাৎ অমুসলিমদের দাওয়াত দেওয়ার জন্য কিছু মুখলিস, কর্মঠ, ত্যাগী ও মেহনতী এক
ঝাঁক দা‘য়ী তৈরী করার লক্ষে,
হক্কানী ওলামায়েকেরামের পরামর্শ সাপেক্ষে,
ফারেগীন ছাত্রদের জন্য বাংলাদেশে সর্ব প্রথম ২০০৯ সালে ইসলামী দাওয়াহ ইনস্টিটিউটে,
এক বছর মেয়াদী তাখাস্সুস ফিদ্দাওয়াহ ( দাওয়াহ সম্পর্কিত
প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কোর্স) চালু হয়েছে। এই কোর্সে আমরা ভর্তি হতে পারি। এই কোর্স সম্পর্কে
সংখিপ্ত কিছু তথ্য নি¤েœ দেওয়া হলো।
তথ্য সূত্রে
: যুবায়ের আহমদ ডটকম
No comments